নিউজ ডেস্ক: ট্যাবের জন্য রাজ্য সরকারের বরাদ্দ টাকা চলে যাচ্ছে অন্য অ্যাকাউন্টে। এই অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের বহু জেলা থেকেই। এই আবহে তদন্তও শুরু হয়েছিল। আর তদন্তে নেমেই মালদহ থেকে এক যুবককে গ্রেপ্তার করল বর্ধমান জেলা পুলিশ। ট্যাব দুর্নীতিতে এটাই প্রথম গ্রেপ্তারি। জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম হাসেন আলি। মালদহের বৈষ্ণবনগরের বাসিন্দা তিনি। কম্পিউটারে ডিপ্লোমা কোর্স করেছেন ধৃত। এই যুবককে জেরা করলেই চক্রের মাথাদের হদিশ মিলবে বলে আশাবাদী পুলিশ। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার উত্তর দিনাজপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও ৩ জনকে। অর্থাৎ মোট ধৃত ৪।
ঘটনার সূত্রপাত দিন কয়েক আগে। অভিযোগ ওঠে, বর্ধমানের বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়াদের মধ্যে সিএমএস হাই স্কুলের ২৮ জন পড়ুয়ার টাকা তাদের অ্যাকাউন্টে না ঢুকে অন্যত্র চলে গিয়েছে। এই বিষয়ে স্কুলের তরফে বর্ধমান সাইবার থানায় অভিযোগ জানালে তদন্ত শুরু হয়। সেখানে দেখা যায় স্কুলের পড়ুয়াদের টাকা তাদের অ্যাকাউন্টে না ঢুকে ভিন রাজ্যের অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে সাইবার শাখার পক্ষ থেকে তদন্ত শুরু হয়। এর পর অন্যান্য জেলা থেকেও এক অভিযোগ ওঠে। রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের নজরে পড়ে বিষয়টি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার টাকা দ্রুত দেওয়ার বিষয়ে নির্দেশ দেন। এর পরই রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে নতুন করে টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করে। এই পরিস্থিতিতে সোমবার মালদহ থেকে ট্যাব দুর্নীতিতে জড়িত সন্দেহে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে বর্ধমান জেলা পুলিশ। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি একাদশ, দ্বাদশের পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার জন্য টাকা পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার। ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয় রাজ্যে সরকারের তরফে। এর জন্যে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে পড়ুয়াদের তালিকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর-সহ রাজ্যে শিক্ষা দফতরে পাঠানো হয়। সেই অনুযায়ী অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠায় সরকার। তাই কীভাবে এক অ্যাকাউন্টের জায়গায় অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা গেল, তা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এই নিয়ে গত ৭ নভেম্বর শিক্ষা দফতরের সচিবকে নির্দেশিকা পাঠিয়েছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। ট্যাবের টাকা যোগ্য পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে না গিয়ে অন্যত্র যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চাওয়া হয় শিক্ষা সচিবের থেকে। উল্লেখ্য, ক’দিন আগেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ৪টি স্কুলে অভিযোগ ওঠে, সেখানকার অনেকেই ট্যাবের টাকা পাননি। তদন্তে নেমে জেলা শিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা জানতে পারেন, ওই ৪টি স্কুলের একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া মোট ৭০ জন ছাত্রছাত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর হ্যাক করে টাকা স্থানান্তর করা হয়েছে। এরফলে ফলে সরকার ট্যাবের টাকা পাঠালেও প্রতারকদের অ্যাকাউন্টে তা চলে গিয়েছে।