নিউজ ডেস্ক: ভিনরাজ্যে নাবালক পরিযায়ী শ্রমিক পৌঁছে দিতে পারলেই প্রতিমাসে মাথাপিছু ৬০০ টাকা করে কমিশন। সেই টাকার লোভে বিহার ও বাংলা থেকে বেঙ্গালুরুতে নাবালক শ্রমিক পাচার করতে গিয়ে মঙ্গলবার ভোররাতে ধরা পড়ল শ্রমিক পাচারের দুই দালাল। তাদের কাছে উদ্ধার হল ১০ জন নাবালক শ্রমিক। অভিযুক্তদের নাম মহম্মদ আবদুল্লাহ ও সঞ্জয় কুমার। দু’জনের বাড়ি মালদার কালিয়াচক এবং বিহারে চম্পারন জেলায়।জিআরপির পক্ষ থেকে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে শিশুশ্রম বিরোধী আইন এবং ভারতীয় ন্যায় সংহিতা বিভিন্ন ধারায় মামলা শুরু করেছে রেল পুলিশ।
রেল সূত্রে খবর, সোমবার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আরপিএফ-এর অফিসে ফোন করে। একটি বার্তা আসে। সেই বার্তায় বলা হয় মোজাফফরপুর-সম্বলপুর এক্সপ্রেস ট্রেনে দশজন কিশোরকে শিশু শ্রমিক হিসাবে খাটানোর জন্য দক্ষিণ ভারত নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তখনই আরপিএফ-এর একটি তদন্তকারী দল পাকুর স্টেশনে এক্সপ্রেসটিকে দাঁড় করায়। এরপর তন্ন-তন্ন করে শুরু হয় তল্লাশি। ট্রেনে তল্লাশি চলাকালীন ওই ২ পাচারকারীকে হাতেনাতে পাকড়াও করে আরপিএফ। ধৃত বিহার ও মালদার দুই পাচারকারীকে মঙ্গলবার রামপুরহাট আদালতে তোলে সাঁইথিয়া জি আর পি। ধৃতদের সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে এদিন, বিহারের ৬ জন ও মালদার ৪ জন নাবালককে নিয়ে বেঙ্গালুরু যাওয়ার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল দুই পাচারকারী। বিহারের চম্পারণ জেলার মধুবনি থানার ৫ জন ও রেজপুর থানার একজনকে নিয়ে ১৫২২৮ ডাউন বেঙ্গালুরু এক্সপ্রেসে চড়েন সঞ্জয়কুমার। মালদহ থেকে তাদের নির্দিষ্ট কামরা এস ওয়ান কোচে চারজনকে নিয়ে চড়েন আবদুল্লা। এদিকে ভিন রাজ্যে নাবালক শ্রমিক পাচারের খবর পেয়েই সে নিয়ে তৎপরতা বাড়ায় ‘বচপন বাঁচাও’ কমিটি। তারা মালদহের আর পি এফ সন্তোষ কুমারকে ফোনে নির্দিষ্ট ট্রেনের কামরা ও নাবালকদের ঠিকানা দিয়ে অভিযোগ জানান। সন্তোষ কুমার হাওড়া জিআরপির সঙ্গে যোগাযোগ করলে রামপুরহাটে ভোররাতে ট্রেন দাঁড়াতেই নাবালকদের উদ্ধার করে, গ্রেপ্তার করা হয় দুই পাচারকারীকে। সকালে সাঁইথিয়া থানার হাতে শিশু ও পাচারকারীদের তুলে দেওয়া হয়। শিশু সুরক্ষা কমিটির জেলা আধিকারিক নিরুপম সিনহা জানান, “মঙ্গলবার সকালে রেল আমাদের হাতে ১০ নাবালককে তুলে দেয়। আমরা তাদের বহরমপুরের কাজি নজরুল হোমে পাঠিয়ে দিয়েছি।”