নিউজ ডেস্ক: বৈতালিক, রবীন্দ্র সঙ্গীত, বিশ্বভারতীর ভার প্রাপ্ত উপাচার্যর পাঠ, বাউল গানের মধ্য দিয়ে শুরু হল ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ শান্তিনিকেতনে পৌষমেলার৷ ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এই মেলা। ২০১৯ সালের পর ফের পূর্বপল্লীর মাঠে প্রথা মেনে হচ্ছে পৌষমেলা ৷ তাই বাড়তি উন্মাদনা সকলের মধ্যে৷ ২০২০ সালে কোভিড পরিস্থিতির জন্য বন্ধ রাখা হয়েছিল মেলাটি ৷ এরপর বিশ্বভারতীর তৎকালীন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত চরমে পৌঁছায়। এর ফলে ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সাল পর্যন্ত মেলা করে নি ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতী ৷ তবে এবার ফের পূর্বপল্লীর মাঠে ফিরলো পৌষমেলা।মেলার দিন গুলিতে মেলা প্রাঙ্গণ ও বিশ্বভারতীর নানান জায়গায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা, বই প্রকাশের অনুষ্ঠান থাকছে ৷ ৪ বছর পর মেলা ফেরায় উচ্ছ্বাসিত সকলেই৷
বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বিনয় কুমার সরেন বলেন, “সবাই উৎসবে অংশ নিক, আনন্দে মাতুক৷ সকাল থেকে প্রথা মেনে শুরু হল পৌষ উৎসব ও পৌষমেলা।” বিশ্বভারতীর ছাত্রীরা বলেন, “সকাল থেকে ছাতিমতলায় সুন্দর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হল পৌষ উৎসব ও মেলা। ২০১৯ এর পর সেই চেনা ছন্দে মেলা হচ্ছে, এটা খুবই আনন্দের৷ সবাই এটাই চেয়েছিলাম। মেলার কয়েক দিন শুধুর ঘোরাঘুরি ও খাওয়া-দাওয়া ৷”
কিভাবে কখন এই পৌষমেলার সূচনা হয়েছিল?
১৯৪১ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ও গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মহা প্রয়াণে মেলা বসলেও তা প্রাণহীন ছিল। ১৯৪৩ সালে দেশে দুর্ভিক্ষ, মনন্তরের জন্য পৌষমেলা বন্ধ ছিল। ১৮৪৩ সালে ২১ ডিসেম্বর (৭ পৌষ) মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশের কাছে ব্রহ্মধর্মে দীক্ষিত হন। এরপরেই ব্রহ্মধর্মের প্রসার ও প্রচার বৃদ্ধি পায়। দীক্ষিত হওয়ার দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ও ব্রহ্মধর্মের প্রসারের স্বার্থে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৪৫ সালে কলকাতার গোরিটির বাগানে উপাসনা, ব্রহ্ম মন্ত্রপাঠের করেন। এটিই পৌষমেলার সূচনা বলে ধরা হয়।পরবর্তীকালে ১৮৬২ সালে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতন আবিষ্কার করে আশ্রম প্রতিষ্ঠার ভাবনা শুরু করেন। ১৮৯১ সাল (৭ পৌষ) ব্রহ্ম মন্দির বা উপাসনা গৃহ প্রতিষ্ঠা হয়। এটিকে শান্তিনিকেতনে পৌষ উৎসব সূচনার সময় হিসাবে ধরা হয়। ১৮৯৪ সালে এই পৌষ উৎসবের পাশাপাশি মন্দির সংলগ্ন মাঠে শুরু হয় পৌষমেলা।