নিউজ ডেস্ক: ছোটবেলা থেকেই জলের সঙ্গে ছিল তাঁর গভীর ভালোবাসা। সাঁতার শুরু করেছেন দু’বছর বয়স থেকেই। ৯ বছরে প্রথম জুনিয়র ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ দিয়ে জয়যাত্রা শুরু। উত্থানটা যেমন রোমহর্ষক তেমনই সাফল্যও পেয়েছেন দু’হাত ভরে। ক্রমে ক্রমে বুলা চৌধুরী হয়ে ওঠেন বাংলা তথা ভারতীয় উঠতি সাঁতারুদের কাছে রোল মডেল।
বুলা বলেন, যখন হামাগুড়ি দিতাম, তখন থেকেই জল ভালবাসতাম। বাড়ির কাছেই ছিল পুকুর। আমার বাবা ওখানেই আমাকে সাঁতার শেখাতে নিয়ে যেতেন। বিয়ের আগে বাবা একবার জলে ডুবে যাচ্ছিলেন। তখনই উনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে ছেলে মেয়েকে সাঁতার শেখাবেন। সাঁতার কাটতে গিয়ে আমি আর জল থেকে উঠতে চাইতাম না।
সেই সঙ্গে বুলা বলেছেন, তখন তো সাঁতারুদের নিয়ে এত পাবলিসিটি ছিল না। তবুও শ্রীরামপুরের একটি সুইমিং ক্লাবে বাবা আমাকে ভর্তি করে দেন। সেই থেকে শুরু।
৮ বছর বয়সে প্রথম প্রতিযোগিতামূলক সাঁতারের অংশ নেন বুলা। তবে সাফল্য পাননি বলে মেডেল পাওয়ার খিদেটা বেড়ে যায়। সাফল্য আসে ৯ বছর বয়সে। সাউথ এশিয়ান ফেডারেশন গেমসে ১৯৯১ সালে জেতেন ৬টা সোনা। ১৯৮৯ এ তিনি দূরপাল্লার সাঁতার শুরু করেন এবং সেই বছরই ইংলিশ চ্যানেল পার হন। তিনি খেলরত্ন ও অর্জুন পুরস্কারও লাভ করেন তাঁর কৃতিত্বের জন্য।
অদম্য জেদ, অসীম সাহস, মনোবল, অক্লান্ত পরিশ্রম, একনিষ্ঠতা ও গভীর অধ্যবসায়ে ভর করে বুলা চৌধুরী এই সাফল্য কুড়িয়েছেন। তিনি শুধু বাংলারই নন বরং মহিলা ক্রীড়াঙ্গনে বিশ্বব্যাপী এক প্রেরণা, তিনি আগামী প্রজন্মের মহিলা খেলোয়াড়দের ক্রীড়া জগতে বিদ্যমান লিঙ্গ বৈষম্যের বিষয়ে সচেতন ও সতর্ক করেছেন ও পাশাপাশি তাঁদের সমস্ত রকম প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়ার জন্য বার্তা দিয়েছেন, “আর যেই সব মেয়েরা লড়াই করছো তাঁদের বলব, অনেকে অনেক কিছু বলবে। শুধু পাখির চোখে লক্ষ্য স্থির রাখো, আর পরিশ্রম করো। নাথিং ইজ ইমপসিবল।”