নিউজ ডেস্ক: ধরিত্রীর প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় আন্তর্জাতিক বৈঠকে যে মানদন্ডই নেওয়া হোক না কেন, ভারত এ ব্যাপারে তার নিজস্ব লক্ষ্যে অবিচল থাকবে। যে কোনও মূল্যে তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে এ ব্যাপারে নীতি নির্ধারণ করছেন। শনিবার ভারতীয় উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞাননগরী কলকাতার সায়েন্স সিটিতে এক অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত।
শেখাওয়াত বলেন, গত এক দশকে ভারতে যে পরিমাণ বৃক্ষরোপন ও সবুজায়ন হয়েছে, সেই কাজ অত্যন্ত সফল হয়েছে। বিশ্বের খুব কম দেশ এরকম সাফল্য পেয়েছে। এই সাফল্যের ধারা অক্ষুন্ন রাখতে আমাদের সকলকে অঙ্গীকার করতে হবে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য ব্যাহত হওয়ায় যে কেবল তাপমাত্রা বাড়ছে বা সমুদ্রতল উঠে আসছে, বা বৃষ্টিপাত কমছে বা অনিয়মিত বৃষ্টি হচ্ছে, তা নয়। ঋতুচক্র বদলে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে। এ জিনিস সমগ্র মানবসমাজকে প্রভাবিত করবে। প্রকৃতিকে আমরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মাধ্যমে হয়তো জয় করার চেষ্টা করি। কিন্তু পরিবেশের ভারসাম্যহীনতা যে অস্তিত্বের সঙ্কট ডেকে আনতে পারে, তা অনুভব করতে হবে। ইকো সিস্টেমের প্রভাব থেকে কেউ নিষ্কৃতি পাবো না।
শেখাওয়াত বলেন, “আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা ধরিত্রীর মালিক নই। তত্বাবধায়ক মাত্র। তাই খুব সতর্ক ও সচেতনভাবে ধরিত্রীকে ব্যবহার করতে হবে। ধরিত্রীকে আন্তরিকভাবে অনুভব করতে হবে মায়ের মতো।” নিজের অভিজ্ঞতার উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, ঘর থেকে বার হওয়ার সময় বিদ্যুতের সুইচ বন্ধ করা, কম্পিউটারে আবশ্যিক তথ্য ছাড়া বাকিগুলো সংরক্ষণ না করা, গরমে শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রিতে না রেখে সুচিন্তিত তাপমাত্রায় চালানো প্রভৃতি প্রাত্যহিক আচরণে প্রত্যেককে আরও সংবেদনশীল হতে হবে।
কলকাতার সায়েন্স সিটিতে এ দিন ‘প্রান্তসীমার পথে?’ নামে একটি পূর্ণাঙ্গ গ্যালারির উদ্বোধন করার পর মঞ্চে একটি সংশ্লিষ্ট বিষয়ক ফোল্ডারের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করে প্রধান অতিথির ভাষণে শেখাওয়াত এই কথা বলেন। কলকাতার এই গ্যালারিকে জনমুখী করার প্রয়োজনীয়তা এবং এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা তিনি দেন। এই সঙ্গে এ রকম উঁচু মানের গ্যালারি দেশের চার আঞ্চলিক সায়েন্স সিটিতেই তৈরির উপযোগিতার কথা বলেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, “কেবল সরকার নয়, আমজনতা, নবীন প্রজন্মকে এ ব্যাপারে অঙ্গীকার করতে হবে।
অনুষ্ঠানে মঞ্চে ছিলেন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের যুগ্মসচিব সঞ্জয় কল, ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ সায়েন্স মিউজিয়ামস (এনসিএসএম)-এর মহানির্দেশক ডঃ অরিজিৎ দত্ত চৌধুরী, বোটানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার অধিকর্তা ডঃ এ এ মাও, কলকাতার সায়েন্স সিটির অধিকর্তা অনুরাগ কুমার প্রমুখ।
দেশের ৩৮টি নির্মীয়মান বিজ্ঞান প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখতে এ দিন কলকাতার সায়েন্স সিটিতে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।