নিউজ ডেস্ক: পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বে বিরোধীদের মনোনয়ন পত্র বাতিল করার অভিযোগ উঠেছিল বিডিওদের বিরুদ্ধে। এমনকি গণনা পর্বেও বিডিও ও পুলিশের বিরুদ্ধে বিরোধী দলের প্রার্থীদের জোর করে হারিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এবার সেই অভিযোগেই যেন সিলমোহর পড়ল আদালতের একটি নির্দেশ ঘিরে।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চ উলুবেড়িয়ার কাশ্মীরা বেগমের মামলায় সংশ্লিষ্ট বিডিও এসডিওদের সাসপেন্ড করার সুপারিশ করেছে। প্রসঙ্গত উলুবেড়িয়া দুই নম্বর ব্লকের সিপিএম প্রার্থী ফিরোজা বিবি ও ওমজা বিবি নির্বাচনের আগেই অভিযোগ জানিয়েছিলেন তাদের মনোনয়ন পত্র ইচ্ছেকৃতভাবে বিকৃত করে বাতিল করা হয়। বিডিও কাছে সুরাহা চেয়ে আবেদন করেও কোন কাজ হয়নি।
এর পর তারা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। বিচারপতি অমৃতা সিনহা এই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। যদিও পরে এই মামলায় বিচারপতি অরিজিত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অপূর্ব রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ বিচারপতি সিনহার সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ দেয়। এবং হাইকোর্ট অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে’র নেতৃত্বে একটি কমিটি গড়ে দেয়। সেই কমিটির রিপোর্টে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দপ্তরের একাংশের লিপ্ত থাকার কথা জানানো হয়েছে। সেই ভিত্তিতেই এই সুপারিশ আদালতের।
আরও পড়ুন: Women Missing: ২০২১ সালে নাবালিকা নিখোঁজেও ‘এগিয়ে বাংলা’, লজ্জার নজির রাজ্যের
প্রসঙ্গত বিরোধীরা বারংবার অভিযোগ জানিয়ে আসছে প্রশাসনের একটা বড় অংশ বিশেষ করে পুলিশের উঁচুতলা, জেলাশাসক, বিডিও এসডিওরা তৃণমূলের হয়ে কাজ করছেন। আদালতের সুপারিশে বিরোধীদের অভিযোগের প্রামাণ্যাতা কয়েকগুন বেড়ে গেল এমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলের। পঞ্চায়েত নির্বাচনের গণনার দিন বিরোধী দলের প্রার্থীদের বের করে দিতে দেখা গেছে পুলিশকে। আদালতের নির্দেশের সঙ্গে সেদিনের ছবির মিল খুঁজে পাচ্ছেন বিরোধীরা।
এ বিষয়ে সিপিএম নেতা শমীক লাহিড়ি বলেন, “একটা চাল টিপলেই বোঝা যায় ভাত সেদ্ধ হয়েছে কি না। বিডিও এসডিও শাসক দলের হয়ে কাজ করছেন এটা স্পষ্ট। তবে কিসের বিনিময়ে তারা এ কাজ করছেন সেটা প্রমাণ সাপেক্ষ। মনোনয়ন থেকে গণনা সবেতেই শাসক দলের হয়ে কাজ করেছে বিডিও এসডিওরা। নির্বাচন কমিশন ও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ ছাড়া একাজ করা অসম্ভব। এই ঘটনা ছোট ঘটনা নয়। ব্যাপক দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ার জন্য সংবিধান বিরোধী কাজ করেছেন বিডিও এসডিওরা”। বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে এই ঘটনার মিল তুলে ধরে বলেন, “যেভাবে নিয়োগ দুর্নীতিতে শিক্ষা দপ্তরের আমলারা মন্ত্রীর সঙ্গে ভাগ বাঁটোয়ারা করে কাজ করেছেন। এক্ষেত্রে তৃণমূল, পুলিশ এবং এই বিডিও এসডিওরা ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে ত্রিস্তরীয় দুর্নীতি করেছে”।