নিউজ ডেস্ক: বন্ধ হওয়ার পথে কলকাতার ঐতিহ্য ট্রাম (Kolkata Tram)। বহুবছর ধরে শোনা যাচ্ছিল যেকোনও মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যেতে পারে ‘কল্লোলিনী তিলোত্তমার’ নস্ট্যালজিয়া ট্রাম। আগের চেয়ে অনেকাংশে কমে গিয়েছে ট্রাম চলার রাস্তা। ধীরে ধীরে কমেছে শহরে ট্রামের সংখ্যাও। আর এবার ট্রামে চেপে কলকাতার পুজো-পরিক্রমায় ইতি টানল রাজ্য পরিবহণ দপ্তর। ট্রামে পুজো-পরিক্রমা বন্ধের ঘোষণা করতে গিয়েই সোমবার পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী কার্যত শহরে ট্রামের দেড়শো বছরের ইতিহাসে দাঁড়ি টানার ঘোষণা করে দিলেন।
নবান্ন সূত্রের খবর, প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনার পরে, শেষমেশ শহর থেকে ট্রাম (Kolkata Tram) তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বালিগঞ্জ-ধর্মতলা ও শ্যামবাজার-ধর্মতলা রুটে শেষ যে দু’টি ট্রাম চলত, তাও বন্ধ করে দিচ্ছে রাজ্য সরকার। ধর্মতলা থেকে ময়দান পর্যন্ত লুপ লাইনে ট্রামের জয় রাইডের ব্যবস্থা থাকবে বলে জানা গেছে। দেশ-বিদেশের পর্যটকরা উপভোগ করতে পারবেন ট্রামযাত্রা। সেটি বাদ দিয়ে শহরের বাকি সব ট্রামলাইনও এবার তুলে ফেলা হবে। এ প্রসঙ্গে পরিবহণমন্ত্রীর বক্তব্য, ”ট্রামকে স্মারক হিসেবে রাখা হবে। চলবে গড়ের মাঠে ধর্মতলা থেকে ময়দান পর্যন্ত। ওই ট্রাম খিদিরপুর পর্যন্তও নিয়ে যাওয়া হবে না।”
তবে কেন এই সিদ্ধান্ত? সে প্রসঙ্গে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী জানিয়েছেন, ট্রাম (Kolkata Tram) চালাতে বিভিন্ন ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। যানজট তৈরি হচ্ছে। দ্রুত গতির যুগে ধীরে চলা ট্রামের কারণে রাস্তায় সমস্যা বাড়ছে। ইতিমধ্যে জনস্বার্থ মামলা হয়েছে, সেখানে কোর্টের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে ট্রাম চালানো নিয়ে রাজ্য সরকারের অবস্থা। সরকার জানাতে চলেছে তাদের অবস্থান।
আসলে ট্রাম যখন চালু হয়েছিল তখন গরুর গাড়ি চলত, টানা রিকশা ছিল এখন অত্যাধুনিক ক্যাব মেট্রো চালু হয়ে গেছে। কিন্তু রাস্তা আগে যা ছিল তাই রয়েছে, নতুন করে রাস্তা হয়নি। ফলে বর্তমানে কালো ধোঁয়া উড়িয়ে, জোরালো শব্দ করে ছুটে চলা গতির যুগে বড্ড বেমানান সে। তার শ্লথ গতি, বড়সড় চেহারা, নিজের পথে নিজের মতো দূষণহীন চলা-এসবই যেন বড় বিড়ম্বনার কারণ হয়ে উঠেছে। তাই শেষমেশ বিদায় নিল কলকাতার ঐতিহ্য ট্রাম (Kolkata Tram)। একসময় গোটা শহর জুড়ে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম ছিল এই যান। তবে বর্তমানে ট্রাম লাইনের সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে। আজ তার প্রয়োজন ফুরিয়েছে। বোঝা হয়ে উঠেছে সে। তাই কলকাতায় আর চলবে না ট্রাম।