নিউজ ডেস্ক: বিজেপির দুই প্রার্থী সহ ছয় বিজেপি কর্মী সমর্থকদের ঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটল। আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে একটি দোকানও। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে আমতা বিধানসভা এলাকার জয়পুর থানার অমরাগড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাঁকরোল গ্রামে। বিজেপির অভিযোগ এলাকার তৃণমূল আশ্রিত দূষ্কৃতীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে শাসক দলের নেতাদের মদতে। আরও অভিযোগ ঘরপোড়াদের ঘরগুলোতে বাইরে থেকে শিকল লাগিয়ে দেওয়া হয়। প্রতিবেশীরা আগুন দেখে চিৎকার করে গৃহস্থালিদের জাগায়। এবং প্রতিবশীরাই তাদের দরজার শিকল খুলে ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করে। এই ঘটনায় কোনওক্রমে বাড়ির বাসিন্দারা বেরোতে পারলেও আগুনে পুড়ে মরেছে হাঁস মুরগি সহ গবাদি পশু। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে জয়পুর থানার পুলিশ, কেন্দ্রীয় বাহিনী জওয়ানরা।
বিজেপির পক্ষ থেকে জয়পুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হচ্ছে। জানা গিয়েছে রাত সাড়ে দশটা নাগাদ খাওয়াদাওয়া সেরে সকলে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। রাত দেড়টা নাগাদ প্রতিবেশীরা শৌচকার্য করতে বের হলে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের বাড়িতে আগুন জ্বলতে দেখেন। তারাই চিৎকার করে সকলকে জাগায়। স্থানীয়দের ও ঘরপোড়াদের বক্তব্য যদি প্রতিবেশীরা দেখে তাদের না তুলত তাহলে পুড়ে মরতে হত সবাইকে। ঘরপোড়াদের অভিযোগ ভোটে বিজেপির হয়ে দাঁড়ানোর পর থেকেই আমাদের উপর হুমকি আসছিল। তৃণমূলের নেতারা আমাদের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দিয়ে এলাকা ছাড়া করার হুমকি দিয়ে আসছিল। কিন্তু তারা তৃণমূলের হুমকি উপেক্ষা করেই সেখানে বসবাস করছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে তৃণমূল সত্যিই যে তাদের ঘরদোর জ্বালিয়ে দেবে তারা তা ঠাহর করতে পারেনি।
আরও পড়ুন: Panchayat Election 2023: ভোট শেষ, তবু ব্যালট উদ্ধারের ঘটনা অব্যাহত
ভূদেব রায় ও স্বপন রায় দুই ভাই। ভূদেবের স্ত্রী কল্পনা রায় ও স্বপনের স্ত্রী ঝুমা রায়। দুই জা বিজেপির হয় এবারে পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার করেছিলেন। অমরাগড়ি এলাকার ৪৩ ও ৩৭ নম্বর দুটি বুথ থেকে দুজনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। স্বপন রায় বলেন। “স্থানীয় তৃণমূলের নেতারা আমাদের ভোটে দাঁড়াতে বারণ করেছিল। আমরা তাদের বারণ উপেক্ষা করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা। তারপর থেকেই আমাদের হুমকি দিয়ে আসছিল। কিন্তু সত্যিই যে তারা আমাদের ঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দিবে তা আমরা বুঝতে পারিনি”। স্বপনের দাদা ভূদেব রায় বলেন, “আমার স্ত্রী ছাড়াও দুটি ছোট ছোট ছেলে মেয়ে রয়েছে। সকলকে দিয়ে বাড়ির মধ্যে ঘুমিয়েছিলাম। আমার বাড়ির বাইরে থেকে শিকল দেওয়া ছিল। আমরা বেরোতে পারছিলাম না। কেউ এসে খুলে দিতে আমরা বের হতে পারি। না হলে হয়তো সবাইকে নিয়ে পুড়ে মরতে হত”। আমতা কেন্দ্রের বিজেপি নেতা বিভাগ জানা বলেন। “বিজেপি কর্মী সমর্থকদের পুড়িয়ে মারার এটা একটা চক্রান্ত ছিল। আমরা তৃণমূলের এই নোংরা রাজনীতির তীব্র নিন্দা করছি। আমরা চাই প্রশাসন এখানে নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রাখুক এবং দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক”।