নিউজ ডেস্ক: আচমকাই বাগুইহাটির হেলা বটতলা ও মধ্য কলকাতার শান্তি চক্রবর্তী রীতিমতো সেলেব। সকাল থেকেই দু’জনকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া সরব। দৈনিক পত্রিকাগুলোতে ছবি। কোথাও কোথাও তাঁদের জীবনকাহিনি বর্ণিত হয়েছে। দু’জনের মিল এক জায়গায়, তাঁরা মোহনবাগান সমর্থক। অমিল প্রচুর। ৮৮ বছরের শান্তি চক্রবর্তী থাকেন মধ্য কলকাতায়। মোহনবাগান মাঠে খেলা থাকলেই হাজির হন। আর কমলেশ উপাধ্যায় জন্ম থেকে পোলিও আক্রান্ত। হাঁটতেই পারেন না। হাঁটেন দু’হাতে ভর দিয়ে। প্রথমে থাকতেন বেলেঘাটায়। এখন বাগুইহাটিতে। মোহনবাগানের ম্যাচ থাকলে মাঠে যাওয়া চাই। শরীর সেখানে প্রতিবন্ধক নয়। অন্য সকলের মতো তিনি ভিন্ন রাজ্যে প্রিয় দলের খেলা দেখতে যেতে পারেননি। আর্থিক কারণে। কিন্তু সকলের প্রিয় শান্তিদি কটক পর্যন্ত গিয়েছেন মোহনবাগানের জন্য গলা ফাঁটাতে।
৮৮ বছরের শান্তিদি ভরপুর সংসার করেন। ছেলে ও বৌমাকে নিয়ে। আচমকাই মেয়ে মারা গিয়েছেন। সেই শোক নিয়েও তিনি মোহনবাগান মাঠ ছাড়েননি। উল্টে আঁকড়ে থাকেন সবুজ- মেরুন রঙকে। কমলেশ যেমন বলছেন, “আমি পড়াশোনা জানি না। আমাকে কেউ কিছু বললে মনে করি না। কিন্তু মোহনবাগান নিয়ে কোনও কথা শুনতে রাজি নই।” দাদা- বৌদির সংসারে মাকে নিয়ে থাকেন কমলেশ। এলাকায় সকলেই তাঁকে চেনেন আপামর মোহনবাগানী হিসেবে। তাঁরা মোহনবাগান একেবারে ছোট্টবেলা থেকে। লাল-হলুদ বাহিনী জিতলেই অত্যাচার চালাতো নিরীহ মোহন জনতার উপরে। কমলেশের কথায়, “এই অত্যাচার আমি সহ্য করতে পারতাম না। ছোটবেলায় দেখেছি। বড়দের কাছে গল্প শুনেছি। তারপর থেকেই আমি মোহনবাগান সমর্থক।”
আরও পড়ুন: Manipur Violence: মণিপুরে ছাড়খার চিঙ্গলসানার বাড়ি-ঘর, পরিবার পরিবার পালিয়ে আশ্রয় শিবিরে
শান্তিদির মোহনবাগানী হওয়া শ্বশুরের কারণে। তাঁর কথায়, “শ্বশুরমশাই ছিলেন পাক্কা মোহনবাগানী। তাঁর সঙ্গে খেলা দেখতে যেতাম। তারপর অসুস্থ হওয়ার পর আমাকে একাই যেতে হতো খেলা দেখতে। খেলা দেখে পুরোটা বসে বলতে হতো। বহুবছর হল শ্বশুরমশাই চলে গিয়েছেন। কিন্তু মোহনবাগানের প্রতি ভালোবাসা এখনও আছে।” দু’জনেই আজ খুশি। ক্লাবের প্রতি ভালোবাসার পুরস্কার পেয়েছেন। আপ্লুত দুজনেই। কলকাতার দু’প্রধানের সমর্থক পরিবেষ্টিত। সমর্থকের সংখ্যা কত? কেউ বলতে পারবেন না। আর সমর্থক দেখিয়ে দু’প্রধানের কর্তারা এতদিন লালে-ঝোলে ছিলেন। কৃতিত্ব প্রাপ্য মোহনবাগানের। সেই লাল-ঝোলের কিছুটা অংশ তবু দু’জন সমর্থককে দিয়েছে। দেখা যাক, ইস্টবেঙ্গলের চোখ কবে খোলে!