Thursday, November 14, 2024

Logo
Loading...
upload upload upload

Gajon Festival: সুবর্ণপুরের গাজনের দেবতা সারা বছরে আঁধারে, পাঁচ দিন আলোয়

Sweta Chakrabory | 21:03 PM, Thu Apr 11, 2024

নিউজ ডেস্ক: সারা বছর বাসুদেব (Vasudev), শিব (Shiva) ও বীর হনুমান (Hanuman) থাকেন খাঁচায় জলবন্দি। প্রতি বছর মাত্র ৫ দিনের জন্য তাঁরা দিনের আলোয় আসেন। চৈত্রমাসের ২৭ তারিখ তাঁদের টালিখোলার তালপুকুর (Talpukur) থেকে উত্তোলন করা হয়। আজ বুধবার ছিলো সেই উত্তোলনের দিন। সকাল থেকে জোরকদমে প্রস্তুতি পর্ব সাঙ্গ করে বেলা গড়াতেই গাজনের সন্ন্যাসীরা জড়ো হন সুবর্ণপুরের (Subarnapur) সিমহাট এলাকায় দিঘির ধারে। সূর্যদেব (Suryadev) অস্ত যাওয়ার আগে স্নানপর্ব শুরু হয়, গ্রামের মহিলারা দুধ দিয়ে স্নান করেন এদিন। পড়ে বিরাট লম্বা লাইন। এরইমধ্যে চলে বাতাসার বৃষ্টি! মনস্কামনা পূর্ণ হওয়া আমজনতা আকাশে ছুঁড়ে দেন বাতাসা।

এককথায় বলা চলে বাতাসা লুট। এদিন রাতেই দেবতাদের দোলায় চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় দুলে পাড়ায়। সেখানে সন্ন্যাস নেওয়া ব্যক্তিদের দীক্ষিত করা হয় শিবমন্ত্রে। পরদিন সেই দোলায় চেপেই বাসুদেব-সহ অন্যান্যদের নিয়ে যাওয়া হয় সুবর্ণপুরের জমিদার বাড়ি রায়েদের বসতভিটেয়। আগে এই গোটা প্রক্রিয়া চলত রায়েদের জমিদারির তত্ত্বাবধানে। কালের নিয়মে জমিদারি প্রথা বিলোপ হওয়ায় এবং শরিকি সমস্যায় এই কর্মসূচি এখন সার্বজনীনভাবে পালিত হয় শিবশক্তি সমিতির উদ্যোগে। এ প্রথা শুরু হয়েছে ১৯৩০ সালে। কথিত আছে, কানাই নাপিত ও কুড়ে ঢাকি নামে দুজন একসঙ্গে স্বপ্নাদিষ্ট হন বাসুদেব রয়েছেন তালপুকুরে। তাঁকে উদ্ধার করার আদেশ দেন বাসুদেব। তাঁরা স্বপ্নের কথা গিয়ে জানান তৎকালীন জমিদারের রায়বাড়িতে। চলে জলে তল্লাশি। কিন্তু কিছুই মেলে না। তারপর হঠাৎ একদিন পার্শ্ববর্তী দুলে-বাগদিপাড়ার কিছু মানুষ মাছ ধরতে নামে এই তালপুকুরে। পুকুরের এক জায়গায় বুদবুদ উঠতে দেখে তারা কোচ ছুঁড়ে মারে। তারপরই দেখা যায় সেখান থেকে রক্ত ভেসে উঠছে। তারা জলে নেমে খোঁজ করতেই উদ্ধার করেন বাসুদেবকে। খবর যায় জমিদার বাড়িতে। জমিদার মশাই বাসুদেবকে মাথায় করে নিয়ে যান বাড়িতে। সেই থেকে বাসুদেবকে জমিদারবাড়ির আরাধ্য কুলদেবতা হিসেবে পুজোর চল। এছাড়াও আরও

অনেক উপকথা প্রচলিত আছে বাসুদেবকে নিয়ে। এদিন এই দেবতা রাত কাটাবেন বাগদিপাড়ার চণ্ডিমন্দির। কাল যাবেন রায়েদের জমিদার বাড়ির মন্দিরে। সেখানে পূজার্চনার পর দেবতারা যাবেন পেটে পা-তলা মন্দির, নীলমন্দিরে। এই দুই মন্দির ঘুরে শুধুমাত্র বুড়োশিব যাবেন লাউপলায় শ্মশান এলাকার কালীমন্দিরে। সেখান থেকে শ্মশানের কাঠ নিয়ে শিব ফিরে আসেন পেটে পা-তলায়। তারমধ্যেই চৈত্র সংক্রান্তির দিন চলে বটি ঝাঁপ ও খেজুর কাঁটা ভাঙা। অবশেষে নতুন বছর শুরুর দিন দেবতাদের ফের খাঁচায় জলবন্দি করা হয়।

upload
upload