Saturday, July 27, 2024

Logo
Loading...

ঐতিহ্য

Loading...
  • বনেদি বাড়ির পুজো বাঁচাতে এগিয়ে এসেছে স্থানীয়রা

    নিউজ ডেস্ক: প্রাচীনকাল থেকেই বাংলায় দুর্গাপুজো হয়ে আসছে। আগে মূলত বনেদি বাড়িগুলিতে পুজো হতো। কালের বিবর্তনের সঙ্গে বাংলার পাড়ায় পাড়ায় বারোয়ারি পুজোর প্রচলন হয়েছে। সময়ের সঙ্গে বনেদি বাড়ির পুজো গুলির জৌলুস অনেকটাই কমে গেছে এবং পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বারোয়ারি পুজোর জৌলুস। অনেক বনেদি বাড়ির পুজো বন্ধও হয়ে গিয়েছে। আবার অনেক বনেদি বাড়ির পুজো বারোয়ারি রূপ পেয়েছে। তেমনি এক বনেদি বাড়ির পুজোর বারোয়ারি রূপ পাওয়া পুজো হল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট শহরের কাঁঠালপাড়া এলাকার  স্বর্গীয় দীননাথ চৌধুরী ওরফে দীনু কবিরাজের বারোয়ারি মন্দিরের দুর্গাপুজো। প্রায় দেড়শ বছরের বেশি পুরনো এই পুজোটি স্বর্গীয় দীননাথ চৌধুরী বাড়ির পূর্বপুরুষরা চালু করেছিলেন।

    এই জমিদার বাড়ির সদস্য কেউ নেই বললেই চলে। ফলে এই পুজো বন্ধ হয়ে যেতে বসলে এলাকাবাসী এগিয়ে আসেন পুজোর হাল ধরতে। বর্তমানে এলাকাবাসীদের উদ্যোগে পুজো হয়ে থাকে। এইবারের থিম পুরুলিয়ার ছৌ নাচ। এই পুজোয় ঠাকুর এবার ছৌ নৃত্যের আদলে তৈরি হয়েছে। প্যান্ডেলেও ছৌ নৃত্যকেই গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

    | 13:40 PM, Wed Oct 18, 2023

  • Nobel Prize 2023: ইরানের মহিলাদের উপর হওয়া অত্যাচারের লড়াই করেছেন তিনি, জেলে বসেই নোবেল শান্তি পুরস্কার পেলেন নার্গিস মহম্মদি

    নিউজ ডেস্ক: গত কয়েকদিন ধরে একের পর এক নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করা হচ্ছে। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল আরেক নাম। এই বছর নোবেল শান্তি পুরস্কার পাচ্ছেন ইরানের সমাজ কর্মী নার্গিস মহম্মদি। বেশ কিছুদিন ধরেই বিশ্বে পরিচিত নাম হয়ে উঠেছেন নার্গিস। আদপে ইরানের বাসিন্দা নার্গিস বহু বছর ধরেই মানবাধিকার নিয়ে লড়াই করছেন। এবার তার জন্যই পুরস্কার পেলেন তিনি। নোবেল পুরস্কার কমিটি জানিয়েছেন যে, 'নরওয়ের নোবেল কমিটি ঠিক করেছেন যে, এই বছর নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হবে নার্গিস মহম্মদিকে। ইরানে নারীদের উপর হওয়া অত্যাচারের বিরুদ্ধে এবং মানবাধিকার ও স্বাধীনতার সপক্ষে যেভাবে তিনি লড়েছেন, যেভাবে আন্দোলন করেছেন এই পুরস্কার তার স্বীকৃতি।' 

    ইরানের মহিলাদের উপর বিগত বেশ কিছু বছর ধরে নানা ধরণের নিপীড়ন চলছে। গত বছরেই ঠিকমতো হিজাব না পরার জন্য এক ইরানি তরুণীকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল সেখানকার পুলিশের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন স্থানীয় বহু মানুষ। প্রকাশ্য রাজপথে হিজাব পুড়িয়ে ফেলেছেন বহু তরুণী। মহিলাদের উপর হওয়া এই সব অত্যাচারের বিরুদ্ধে ও মানবাধিকার নিয়ে বহুদিন ধরেই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন নার্গিস। বর্তমানে ইরানেই জেলবন্দি রয়েছেন তিনি। গত বছর নভেম্বর মাসে গ্রেফতার হন নার্গিস। ২০১৯ সালের আন্দোলনে নিহতদের স্মরণসভায় যোগ দেওয়ার সময় তাঁকে গ্রেফতার করেন ইরানের পুলিশ।

    ৫১ বছর বয়সী এই সমাজকর্মী কার্যত জেলে বসেই নোবেল শান্তি পুরস্কার পেলেন। নার্গিস মহম্মদি এখনও পর্যন্ত ১৩ বার জেলবন্দি হয়েছেন, ৫ বার দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। যদিও এখনো তিনি তাঁর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। নোবেল পুরস্কারের অর্থমূল্য ১০ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনো। সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নাম অনুযায়ী এই নোবেল পুরস্কার চালু হয়। তাঁর রেখে যাওয়া অর্থমূল্য থেকেই এই পুরস্কার দেওয়া হয়। চলতি বছরের ১০ ডিসেম্বর এই পুরস্কার জয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। 

    | 16:31 PM, Fri Oct 06, 2023

সংস্কৃতি

  • Kolkata Heritage: পড়ুয়াদের জন্য মুক্ত পাঠাগার! নজির গড়ল ১৩৭ বছরের পুরনো কলেজস্ট্রিটের বইয়ের দোকান

    নিউজ ডেস্ক: কলকাতার সব থেকে পুরনো বইয়ের দোকান দাশগুপ্ত অ্যান্ড কোং এক নতুন উদ্যোগ নিতে চলেছে। পড়ুয়াদের কথা মাথায় রেখে এই দোকানের চত্বরের মধ্যেই একটা অংশে চালু করা হচ্ছে মুক্ত পাঠাগার। বিনামূল্যে এখানে বই পড়তে পারবেন পড়ুয়ারা। যেসব পড়ুয়াদের বই কেনার সামর্থ্য নেই, তাদের কথা ভেবেই মূলত এই উদ্যোগ নিতে চলেছে দাশগুপ্ত অ্যান্ড কোং।

    কলকাতার বুকে এই দোকানটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনেক ইতিহাস। এখানে ১৮৯০ থেকে ১৯০০ সালের বহু পুরনো বই, ঘড়ি ইত্যাদি দুষ্প্রাপ্য উপাদান রয়েছে, ফলে এর একটা আর্কাইভাল গুরুত্বও রয়েছে। যদিও ২০০৪ সালে একটি অগ্নিকাণ্ডে সেসবের অধিকাংশই পুড়ে নষ্ট হয়ে যায়। জানা গিয়েছে বইয়ের দোকানের দোতলায় সেই পাঠাগার তৈরি হতে চলেছে। দোকানের কর্ণধার ৭১ বছরের অরিন্দম দাশগুপ্ত বলেন যে, আগামী দুর্গাপুজোর মধ্যে প্রায় ১০ হাজার বই নিয়ে চালু হতে চলেছে এই মুক্ত পাঠাগার। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এখানে দুপুর থেকে বিকেল ৬টার মধ্যে এসে বই পড়তে পারবেন পড়ুয়ারা। বাংলা এবং ইংরেজি দুই ভাষারই বইপত্র থাকবে এখানে, সব বয়সের মানুষেরাই এখানে এসে বই নেড়েঘেঁটে দেখতে পারবেন। কর্ণধার আরো জানান যে এই পাঠাগারের মাধ্যমে বাংলা মাধ্যম এবং ইংরেজি মাধ্যম উভয় ব্যবস্থার ছাত্র-ছাত্রীরাই উপকৃত হবেন।

    আরও পড়ুন: Panchayat Election in Bengal: সরকার ও নির্বাচন কমিশন- ভোট ও ছাপ্পা! আসলে জনগণকে ধাপ্পা

    ১৮৮৬ সালে কলেজস্ট্রিটে তৈরি হয়েছিল এই বইয়ের দোকানটি যা বর্তমানে হেরিটেজ বুকশপ-এর আখ্যা পেয়েছে। এই বছর ১ জুলাই কলকাতা কর্পোরেশন এই দোকানটিকে গ্রেড ২ এ হেরিটেজের আখ্যায় ভূষিত করেছে। জানা গিয়েছে ২৪ জুলাই দোকানে লাগানো হবে নীল সিলমোহর। কিন্তু কেন বইয়ের দোকানের মধ্যেই পাঠাগার চালু করতে চাইলেন কর্ণধার অরিন্দম দাশগুপ্ত? তাঁর কথায় জানা যায়, এখন যেভাবে শিক্ষার প্রসার ঘটেছে তাতে লকডাউনের সময় তিনি দেখেছেন যে বহু মুসলিম-প্রান্তিক ছেলে-মেয়ে তাদের দোকানে এসে বই কিনত, দেখেই বোঝা যেত তাদের সামর্থ্য ছিল অনেকটাই কম। আর তাই সেই প্রান্তিক ছাত্র-ছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে এই পাঠাগার চালু করার পরিকল্পনা করেছেন অরিন্দম দাশগুপ্ত।

    ১৮৮৬-তে অরিন্দম পূর্বপুরুষ গিরিশচন্দ্র দাশগুপ্ত যশোরের কালিগ্রাম থেকে এদেশে এসে এই দোকানটি প্রথম চালু করেন। সেই থেকেই বহু ইতিহাসের সাক্ষী কলেজস্ট্রিটের বুকের এই দাশগুপ্ত অ্যান্ড কোং। আজও দিনে প্রায় ৪০০ মানুষ বই কিনতে হাজির হন ইতিহাস-প্রাচীন এই দোকানে। দেওয়ালে দেওয়ালে বইয়ের ধুলোর মধ্যে আজও যেন ইতিহাস কথা বলে।

    Editor | 15:54 PM, Sat Jul 15, 2023

  • Tala Bridge History: চলতি কথায় টালা ব্রিজ, পোশাকি নাম হেমন্ত সেতু, কে এই 'হেমন্ত' জানেন কী?

    নিউজ ডেস্ক: দীর্ঘ নয় দশক ধরে উত্তর কলকাতার মানুষের সাথী এই টালা ব্রিজ। ডানলপ, সোদপুর, দক্ষিণেশ্বর যেখান থেকেই শ্যামবাজার পাঁচ মাথা পেরিয়ে যেতে চান না কেন, টালা ব্রিজ পেরোতেই হবে। ২০১৯ সাল থেকে মেরামতির জন্য বন্ধই ছিল টালা ব্রিজ, বাস-প্রাইভেট গাড়ি সবই চলাচল করছিল পার্শ্ববর্তী লকগেটের রাস্তা দিয়ে। বিগত ২৪ সেপ্টেম্বর নতুন করে সাজানো টালা ব্রিজের উদ্বোধন হল। ১৯৩৬ সালে প্রথম চালু হয় এই টালা ব্রিজ, তবে অনেক পরে টালা ব্রিজের নতুন করে স্থায়ী কাঠামো তৈরি হয় ১৯৬৪ সালে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তখন প্রফুল্লচন্দ্র সেন। ব্রিজের সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনেক লোককথা, অনেক ইতিহাস। অনেকেই জানেন, এই ব্রিজের পোশাকি নাম হেমন্ত সেতু। কিন্তু জানেন কী আসলে কে এই হেমন্ত? বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের নামেই কি এই সেতুর নাম? নাকি এই নামকরণের আড়ালে লুকিয়ে আছে অন্য কোনো ইতিহাস? 

    সরকারি নথির ইতিহাস বলছে, ১৯৭৩ সালের ৫ অক্টোবর টালা ব্রিজের নামকরণ হয় হেমন্ত সেতু। নামের মধ্যে এই হেমন্ত আসলে হেমন্তকুমার বসুকেই স্মরণ করায়। হেমন্তকুমার ছিলেন সুভাষচন্দ্র বসুর সহকর্মী এবং সারা ভারত ফরোয়ার্ড ব্লকের চেয়ারম্যান। তখন সত্তর দশক। নকশাল আন্দোলনের জোয়ারে পুরো বাংলা উত্তাল। তারই সঙ্গে বাংলাদেশে চলছে মুক্তিযুদ্ধ। রক্তাক্ত বাংলার রাজপথ রোজ আলিঙ্গন করছে নতুন নতুন মৃতদেহ। এই পরিস্থিতির মধ্যেই নির্বাচনে ফরোয়ার্ড ব্লকের হয়ে শ্যামপুকুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়ে দাঁড়ান হেমন্তকুমার বসু। ছিয়াত্তর বছরের এক বৃদ্ধের উপর হয়তো ক্ষোভ ছিল কারো।

    আরও পড়ুন: Flurys: হেরিটেজের তকমা পেল পার্ক স্ট্রিটের ফ্লুরিস, স্বীকৃতি দিল 'ইনটাক'

    ১৯৭১ সাল, ২০ ফেব্রুয়ারি। টাউন স্কুলের সামনে একদল আততায়ী আক্রমণ করে হেমন্তকুমার বসুকে। ভোজালির ঘায়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তাঁর শরীর। রক্তে ভেসে যায় রাজপথ। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। টালা ব্রিজের নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এই রক্তাক্ত ইতিহাস। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তখন সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়। তাঁর উদ্যোগেই হেমন্তকুমার বসুর স্মৃতিতে তাঁর ৭৮তম জন্মদিনে টালা ব্রিজের নাম বদলে রাখা হয় 'হেমন্ত সেতু'। কলকাতার দৈনন্দিন ব্যস্ততার আড়ালেই রয়ে গেছে এই ভুলে যাওয়া ইতিহাস। 

    Editor | 11:09 AM, Mon Jul 03, 2023

বিশেষ নিবন্ধ

  • Nababarsha 2024: শুরু হচ্ছে হিন্দু নববর্ষ,রইল হিন্দু নববর্ষের অজানা ইতিহাস

     

    নিউজ ডেস্ক: সামনেই পয়লা বৈশাখ(bengali new year), ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুসারে পয়লা জানুয়ারি থেকে নতুন বছর শুরু হলেও হিন্দু ধর্মে নতুন বছরের ক্যালেন্ডার আলাদা হয়। বৈদিক পঞ্জিকা অনুসারে চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের প্রতিপদ তিথি থেকে শুরু হয় হিন্দু নববর্ষ।এ বছর ৮ এপ্রিল থেকে হিন্দু নববর্ষ(hindu nababarsa) শুরু হচ্ছে। প্রতিপদ তিথি শুরু হচ্ছে সোমবার, ৮ এপ্রিল রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে। উল্লেখ্য এই হিন্দু নববর্ষ গুড়ি পাড়োয়া, উগাদি, বৈশাখাদি, বৈশাখী, নভরোজের মতো নামেও পরিচিত।

    হিন্দু ক্যালেন্ডারে(hindu calender) রয়েছে ১২টি মাস, যার মধ্যে প্রথম মাস হল চৈত্র। এরপর বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র, আশ্বিন, কার্তিক, আগ্রাহায়ন, পৌষ, মাঘ এবং শেষ মাস হল ফাল্গুন। ভারতীয় উপমহাদেশে হিন্দু এবং শিখরা যেই ক্যালেন্ডার পদ্ধতি অনুসরণ করে তাকে বলা হয় বিক্রম সংবত। 'সংবত' অর্থাৎ বছর। সম্রাট বিক্রমাদিত্য ৫৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এই পদ্ধতি প্রথম অনুশীলন শুরু করেছিলেন।

    হিন্দু নববর্ষ(hindu nababarsa) আসার সাথে সাথেই প্রকিতিও সেজে ওঠে। এই মুহূর্তে পাতাঝরার মরশুম চলছে। পাতা ঝরার মরশুম শেষ হলেই প্রকৃতি আবার নিজেকে নতুন রূপে সাজাতে শুরু করে। এই সময় প্রকৃতি নিজের জীর্ণ রূপ ত্যাগ করে ধীরে ধীরে সবুজ হতে থাকে। 

    তবে বিশেষজ্ঞদের মতে হিন্দু নববর্ষের গুরুত্ব অনেক। বিক্রম সংবত ২০৮১ সালের অধিপতি মঙ্গল ও শনি, তাই এই বছরে থাকবে অশান্তির ছায়া। ভারতে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব হলেও দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এই নতুন বছরে। এ প্রসঙ্গে বালিয়ার বিখ্যাত হনুমান মন্দিরের পুরোহিত আচার্য পণ্ডিত বিজয় নারায়ণ শরণ আমাদের জানিয়েছেন যে, এই পাতাঝরার মরশুম হিন্দু নববর্ষের আগমন বার্তা বয়ে আনে। শুধু তাই নয়, এই সময় গ্রহের অবস্থানও পরিবর্তন হয়। হিন্দুদের নতুন বছর অর্থাৎ চৈত্র শুক্ল প্রতিপদে, হিন্দু ক্যালেন্ডার(hindu calender)ও পরিবর্তিত হয় এবং নবরাত্রির পূজার মাধ্যমে প্রকিতির এই নতুন রূপের উদযাপন হয়। এই নবরাত্রিতে(navaratri) প্রতিটি বাড়িতে মহাসমারোহে পুজো করা হয় দেবীর।

    অন্যদিকে এই বছরের হিন্দু নববর্ষ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে কারণ জ্যোতিষশাস্ত্রের গণনা অনুসারে, প্রায় ৩০ বছর পর এই বার নববর্ষে(nababarsa) একটি শুভ রাজযোগ তৈরি হচ্ছে। অমৃত সিদ্ধি যোগ, সর্বার্থ সিদ্ধি যোগ এবং শশ রাজযোগ ৯ এপ্রিল গঠিত হবে। এই বছর জুড়েই শনি ও মঙ্গল গ্রহের প্রভাব দেখা যাবে। হিন্দু নববর্ষে(hindu nababarsa)গঠিত এই শুভ যোগগুলি বৃষ রাশির জাতকদের ভাগ্যকে উজ্জ্বল করতে চলেছে।

    Sweta Chakrabory | 12:05 PM, Thu Apr 04, 2024

  • MahaShivratri 2024: কেন পালন করা হয় শিবরাত্রি? উপবাস রেখে পুজো করলে দূর হবে গ্রহ দোষও?

    নিউজ ডেস্ক: মহাশিবরাত্রি বা শিবরাত্রি হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ হিন্দুধর্মীয় উৎসব। এই মহাশিবরাত্রি ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণ পক্ষের চতুর্দশী তিথিতে পালিত হয়। মহাশিবরাত্রি হল হিন্দুধর্মের সর্বোচ্চ আরাধ্য দেবাদিদেব মহাদেব ‘শিবের মহা রাত্রি’। শিব পুরাণ অনুসারে, এই রাত্রেই শিব সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয়ের মহা তাণ্ডব নৃত্য করেছিলেন। আবার এই রাত্রেই শিব ও পার্বতীর বিয়ে হয়েছিল। তাই ফাল্গুন মাসকে শিব-পার্বতীর বিবাহ মাস হিসাবে ধরা হয়। এই মাসে শিবের পুজো বিশেষভাবে আয়োজিত হয় শিবরাত্রির দিন। সেই পবিত্র দিনটিতে শিবের পুজোতেও থাকে বিশেষ আয়োজন। শিবরাত্রির দিন দিনভর চলে নানা রীতি। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, অবিবাহিত মেয়েরা শিবরাত্রি করলে মনের মতো বর পায় । বিবাহিতদের বৈবাহিক জীবন সুখের হয় ।

    এছাড়াও শিবঠাকুরের আরাধনা করলে জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি বৃদ্ধি হয় বলে মনে করা হয়। এছাড়াও অনেক ধরনের গ্রহ দোষও দূর হয়। শাস্ত্রে বলা হয়েছে মহাশিবরাত্রির দিনে শুভ সময়ে ভগবান শিবের আরাধনা করলে সব ধরনের মনস্কামনা পূর্ণ হয়। প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে মহাশিবরাত্রি পালন করা হয় । সারাদিন-রাত উপোস থেকে মহাদেবের মাথায় জল ঢেলে শিবরাত্রির ব্রত পালন করেন ভোলেনাথের ভক্তরা । এবছর ৮ মার্চ পড়েছে শিবরাত্রি। এই তিথির ভিতর চার প্রহরের পুজো অত্যন্ত শুভ। পঞ্জিকা মতে তিথির সময় - ৮ মার্চ রাত ৯ টা ৫৭ মিনিট থেকে ৯ মার্চ সন্ধ্যে ৬টা ১৭ মিনিট।

    শাস্ত্রে বলা হয়েছে, মহাশিবরাত্রির দিন সাধারণত চার প্রহরে শিবের আরাধনা সম্পন্ন হয়। মহাশিবরাত্রির দিন প্রথম প্রহরের উপবাস ও পুজো শুরু হবে সন্ধ্যে ৬টা ২৫ মিনিটে, দ্বিতীয় প্রহরের পুজো ও উপবাস শুরু হবে রাত সাড়ে ৯টায়। এরপর তৃতীয় প্রহরের পুজো শুরু হবে রাত ১২টা ৩১ মিনিটে এবং শেষ ও চতুর্থ প্রহরের পূজা শুরু হবে ভোর ৩টা ৩৪ মিনিটে। মহাশিবরাত্রির ব্রত ও উপবাস সমাপ্ত হবে ভোর ৬টা ৩৫ মিনিটে। পঞ্চাঙ্গ অনুসারে, ৯ মার্চ সকাল ৬টা ৩৭ মিনিট থেকে দুপুর সাড়ে ৩টার মধ্যে মহাশিবরাত্রির উপবাস ভাঙতে পারেন শিবভক্তরা।

    মহাশিবরাত্রির দিন মহাদেব ও পার্বতীর আরাধনা করারও রীতি রয়েছে। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, এই বিশেষ দিনে শিব-পার্বতীর আরাধনা করলে সমস্ত সিদ্ধিলাভ হয়। কেটে যায় জীবনের সমস্ত সমস্যা। পাশাপাশি এদিনে শুদ্ধচিত্তে পুজো ও উপবাস রাখলে দাম্পত্য জীবনেও সুখ-সমৃদ্ধি বয়ে আসে।

    Sweta Chakrabory | 10:06 AM, Fri Mar 08, 2024

  • Rash Yatra 2023: চৈতন্যভূমি নবদ্বীপে রাস যাত্রা উপলক্ষ্যে জনজোয়ার 

    দুর্গা পুজো, কালি পুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো কাটিয়ে বাঙালি এবার মেতেছে রাস উৎসবে। রাসের কথা বললেই প্রথমে আসে নবদ্বীপের রাসের কথা। তারই দোসর শান্তিপুরের রাস। এক সময় বৈষ্ণবদের হাত ধরে শুরু হলেও, এখন তা সর্বজনীন। শান্তিপুরের রাসে পুরাণ আর ইতিহাস মিলে মিশে এক হয়ে যায়। 

    পুরাণ বলছে, শান্তিপুরে রাসের সূচনা করেন অদ্বৈতাচার্য। শোনা যায়, তিনি ছিলেন শিবের অবতার। রাস সম্পর্কে অবগত না হওয়াতে সে নিয়ে বেশ কৌতূহল ছিল শিবের মনে। মানুষের বিশ্বাস যোগমায়া দেবীও নাকি কৃষ্ণের প্রতি মোহিত হয়ে রাসে অংশ নিয়েছিলেন বলে জানা যায়। ১৬০০ গোপিনী নিয়ে মত্ত অবস্থায় রাস প্রাঙ্গণে শিবের উপস্থিতি টের পেয়ে যান কৃষ্ণ। তখনই তিনি রাস প্রাঙ্গন ত্যাগ করেন। কারণ, রাসে কৃষ্ণ ব্যতীত অন্য কোনো পুরুষের প্রবেশ ছিল নিয়মের বাইরে। এই সময়ে সখীরা ভাবতে থাকেন, এবার তাহলে রাস হবে কী করে? তখনই তারা ঠিক করেন, শ্রীরাধাকে দোলায় চাপিয়ে নগর পরিভ্রমণ করা হবে। সেদিনের জন্য রাই-ই রাজা। এ কারণে শিবের আর রাস দেখা হয় না। তখন তিনি ঠিক করেন এই রাস তিনি একদিন মর্ত্যবাসীর সামনে আনবেন। যেহেতু তিনি দ্বাপরে রাস ভেঙেছিলেন তাই অদ্বৈতাচার্য রূপে আবির্ভূত হন।

    চৈতন্য ভূমি নবদ্বীপে ঐতিহ্যমন্ডিত রাসযাত্রা উপলক্ষ্যে এদিন সকাল থেকে অসংখ্য মানুষের ভিড় শহরের বিভিন্ন রাস্তায়। দেখা গেল বিভিন্ন পুজা কমিটির পক্ষ থেকে চিরাচরিত প্রথা মেনে নবদ্বীপের প্রাণকেন্দ্র পোড়ামাতলায় নবদ্বীপের আরাধ্যা দেবী মাপোড়ামার মন্দিরে নবমী পুজো দেওয়ার জন্য  ভিড় করছেন। 

    অন্যদিকে কোচবিহারের ঐতিহ্যবাহী মদনমোহন বাড়িতে ১৩৪তম রাস উৎসবের সূচনা হলো। রাজ আমলের এই ঐতিহ্যবাহী নিদর্শনটি কোচবিহারের মহারাজাদের ধর্মনিরপেক্ষতার এক নিদর্শন। রাজা আমল থেকে রাস উৎসবের রাস চক্র তৈরি করে আসছেন চার পুরুষ ধরে এক মুসলিম পরিবার। বংশপরম্পরায় আলতাফ মিয়ার পরিবার এই রাজচক্র তৈরি করেন। লক্ষী পূজোর পর থেকে নিরামিষ ভোজন করে তিনি এই রাস চক্র নির্মাণের কাজ শুরু করেন।

    Editor | 17:03 PM, Mon Nov 27, 2023

  • Karunamoyee Kali Temple: অকাল প্রয়াত মেয়ের স্মৃতিতে তৈরি করেন কালী মন্দির

    নিউজ ডেস্ক: সাল তখন ১৭৬০। পলাশীর যুদ্ধের মাত্র তিন বছর পেরিয়েছে। সেই সময় কলকাতার বুকে গড়ে উঠল এক কালী মন্দির। সতীপীঠ হিসেবে কালীঘাটের পরিচিতি থাকলেও এই মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে কলকাতার বিখ্যাত এক জমিদার বাড়ির ইতিহাস। টালিগঞ্জের করুণাময়ী কালী মন্দির। ১৭৬০ সালের বৈশাখ মাসের শেষ শনিবার প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে স্বমহিমায় এখানে পুজিতা হয়ে আসছেন মা করুণাময়ী। এ বছর ২৬৪ তম বর্ষে পা দিল এই মন্দির।

    কলকাতার ইতিহাসের সঙ্গে ওতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে রয়েছে সাবর্ণ রায়চৌধুরির জমিদারির নাম। রায়চৌধুরি পরিবারের ২৭তম পুরুষ নন্দদুলাল রায়চৌধুরি। তিন পুত্রের পর অনেক আশা করে পেয়েছিলেন এক কন্যা। কালী মায়ের কৃপায় কন্যা সন্তান জন্মালে মেয়ের নাম রাখেন করুণা। তবে ভাগ্যের পরিহাসে মাত্র সাত বছর বয়সে অকাল প্রয়াণ হয় তাঁর। মেয়ের মৃত্যুর শোকে কাতর হয়ে নন্দদুলাল সিদ্ধান্ত নেন সন্ন্যাস নেবেন তিনি। আর তার পরেই স্বপ্নাদেশ পান মা কালীর। 

    সাত বছরের মেয়ে হিসেবেই মায়ের পুজো হয় এখানে। ঠিক জন্মদিনে যেমন মেয়েকে আদর করে পাত সাজিয়ে দেওয়া হয় এখানেও ঠিক তেমন ভাবেই লুচি, পোলাও, ভাত, নিরামিষ তরকারি, ফল মিস্টি দিয়ে ভোগ নিবেদন করা হয়ে থাকে। বিশেষ তিথিতে জনসমাগম হয় এখানে। এমনকি পুলিশের সাহায্যে ভিড় নিয়ন্ত্রন করতে হয় মন্দির চত্বরে।

    তবে শুধুমাত্র মন্দিরে পুজোই নয় আরো সামাজিক কাজ হয়ে থাকে মন্দিরের তরফে। শ্রীরামকৃষ্ণের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আশ্রমে বাচ্চাদের লালনপালন, দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের বিনামূল্যে টিউশন দেওয়া, আবাসিক বৃদ্ধদের খাবারের আয়োজন করা, মন্দির প্রাঙ্গণে স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করা, বস্ত্র বিতরণ ইত্যাদি সেবামূলক কাজেও জড়িত এই করুণাময়ী কালীমন্দির।

    | 17:01 PM, Sat Nov 11, 2023

বাংলার ইতিহাস

  • Janmasthami 2023: বাঙালির ঘরের আদুরে ঠাকুর লাড্ডু-গোপাল, কীভাবে নিত্যদিন পরিচর্যা করবেন তাঁকে?  

    নিউজ ডেস্ক: আগামীকাল ৬ সেপ্টেম্বর এবং পরশু অর্থাৎ ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পালন করা যাবে জন্মাষ্টমীর। হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, রোহিণী নক্ষত্রে মধ্যরাত ১২টায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন শ্রী কৃষ্ণ। এই কারণে তিথি অনুযায়ী দুই দিনই আরাধনা করা যায় তাঁর। দেশ জুড়ে চক্রধারী শ্রীকৃষ্ণের পুজো হলেও বাঙালি তার আদরের  লাড্ডু গোপালের আরাধনা কোর্টেই উৎসাহী বরাবর। তাই বাঙালির পুজোর বেদীতে বড় আঁকারের মূর্তি নয়, শ্রী কৃষ্ণ শোভা পান ছোট্ট খাটে আদরের গোপাল রূপেই। পরিবারের সদস্য হিসেবেই দেখা হয় তাঁকে। অর্থাৎ, খাওয়া-ঘুম-স্নান-- বাড়ির আর ৫ জনের মতো এই দৈনন্দিন কৃত্যগুলি করতে হয় বাঙালির গোপালকেও। 

    গোপালকে বাড়ির সদস্যের মধ্যে ধরা হলেও তার দেখভালের জন্য কিন্তু রয়েছে বেশ কিছু নিয়ম-কানুন। আর সেগুলি যথাযথভাবে না মানলে গোসা করে বসে আদুরে গোপাল! বাড়িতে লাড্ডু গোপালকে এনে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করার পর থেকেই নিয়ম মেনে করতে হয় তার পরিচর্যা। নিয়মিত স্নান করানো, শঙ্খের জল দিয়ে অভিষেক করানো, যত্ন করে গা মুছিয়ে দেওয়া, তারপর সুন্দর জামা-কাপড় পরানো-- এ সবকিছুরই দাবি করে থাকে গোপাল। 

    দিনে ২ বার অবশ্যই পুজো করতে হয় গোপালের। আর ভোগ হিসেবে তো রাখতেই হবে তাঁর সাধের মাখন! তবে তেমনও আড়ম্বর আশা করেন না ছোট্ট গোপাল। বাড়িতে বড় করে পুজো-উৎসব না থাকলে নিত্যদিন সাধারণ কোনও মিষ্টি, নকুলদানা-বাতাসা বা চিনিও গোপাল গ্রহণ করেন ভোগ হিসেবে। তবে হ্যাঁ, বাড়িতে নতুন কোনও সাত্ত্বিক খাবার এলে অবশ্যই তা প্রথমে নিবেদন করতে হবে গোপালকে। তা না হলে নাকি ভীষণ কষ্ট পান তিনি। অনেক স্নেহময়ী গৃহকর্ত্রী  আবার আদরের আতিশয্যে খেলনা কিনে দেওয়া কিংবা বাচ্চাদের মতো ছড়া পড়ে ঘুম পাড়িয়ে দিতেও কুণ্ঠা বোধ করেন না। এভাবেই শুধু জন্মাষ্টমী নয়, বছরের ৩৬৫ দিনই বাঙালির পরিবারের একজন হয়েই রয়ে যায় আদরের কাঙাল গোপাল ঠাকুর!

    | 17:17 PM, Tue Sep 05, 2023

  • Largest Marble Shiva Lingam: এশিয়ার বৃহত্তম কষ্টিপাথরের শিবলিঙ্গ সহ মন্দির তৈরি করেছিলেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র, কিন্তু কেন জানেন?

    নিউজ ডেস্ক: শ্রাবণের তৃতীয় সোমবারে বহু দূর দুরান্ত থেকে ভক্তরা এসে জল অর্পণ করতে এলেন এশিয়ার বৃহত্তম কষ্টিপাথরে শিবলিঙ্গ শিব নিবাসে। দূর দূরান্ত থেকে পুরুষ ও মহিলা ভক্তরা এসেছেন তাদের মনস্কামনা পূরণ করতে শিবনিবাস মন্দিরে জল ঢেলে। কিন্তু জানেন কি কেন এই মন্দির তৈরি করেছিলেন মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায়? জানা যায় মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র বাংলায় বর্গী আক্রমণের সময় তাঁর রাজধানী কৃষ্ণনগর থেকে এখানে সরিয়ে আনেন। শিবের ভক্ত কৃষ্ণ চন্দ্র তার আরাধ্যের নামে নামকরণ করেন শিবনিবাস। এখানে সুন্দর রাজপ্রাসাদ ও কয়েকটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। তার মধ্যে এখন মাত্র তিনটি মন্দির অবশিষ্ট আছে। প্রতিটি মন্দিরের উচ্চতা ৬০ ফুট। 

    এই শিবনিবাসে তাঁর রাজধানী প্রতিষ্ঠার একটি কাহিনী আছে। মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র নসরত খাঁ নামক এক দুর্ধর্ষ ডাকাতকে দমন করতে মাজদিয়ার কাছে এক গহন অরণ্যে উপস্থিত হন। ডাকাতকে দমন করে সেখানে তিনি একরাত অবস্থান করেন। পরদিন সকালবেলায় তিনি যখন নদীতীরে উপস্থিত হন তখন একটি রুইমাছ জল থেকে লাফিয়ে মহারাজের সামনে এসে পড়ে। আনুলিয়া নিবাসী কৃষ্ণরাম নামক মহারাজের এক আত্মীয় তখন মহারাজকে বলেন, 'এ স্থান অতি রমণীয়, উপরন্তু রাজভোগ্য সামগ্রী নিজে থেকেই মহারাজের সামনে এসে হাজির হয়। তাই এই স্থানে মহারাজ বাস করলে মহারাজের নিশ্চয়ই ভাল হবে'। মহারাজও তখন বর্গীর অত্যাচার থেকে বাঁচতে এই রকমই একটা নিরাপদ জায়গা খুঁজছিলেন। স্থানটি মনোনীত হলে তিনি কঙ্কনাকারে নদীবেষ্টিত করে স্থানটি সুরক্ষিত করেন। এই শিবনিবাসেই মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র মহাসমারোহে অগ্নিহোত্র বাজপেয় যজ্ঞ সম্পন্ন করেন। এই উপলক্ষ্যে কাশী, কাঞ্চি প্রভৃতি স্থান থেকে সমাগত পণ্ডিত মণ্ডলী তাঁকে 'অগ্নিহোত্রী বাজপেয়ী' আখ্যা প্রদান করেন। সেই সময়ে শিবনিবাস কাশীতুল্য বলে পরিগণিত হত। 


    কৃষ্ণচন্দ্র প্রতিষ্ঠিত শিবনিবাসের মন্দিরগুলি বাংলা মন্দিররীতিতে উল্লেখযোগ্য সংযোজন। এখানকার প্রথম দেবালয়টি 'রাজরাজেশ্বর' শিবমন্দির নামে পরিচিত। সাধারণের কাছে যা 'বুড়োশিবের মন্দির' নামে অভিহিত। এই মন্দিরটি বাংলার প্রচলিত মন্দিররীতির কোন শ্রেণীতে পড়ে না। উঁচু ভিত্তিবেদির উপর স্থাপিত, অষ্টকোণ প্রস্থচ্ছেদের এই মন্দিরের শীর্ষদেশ ছত্রাকার। খাড়া দেওয়ালের প্রতিটি কোণে মিনার আকৃতির আটটি সরু থাম। প্রবেশদ্বারের খিলান ও অবশিষ্ট দেওয়ালে একই আকৃতির ভরাটকরা নকল খিলানগুলি 'গথিক' রীতি অনুযায়ী নির্মিত। যার প্রতিষ্ঠাকাল ১৭৫৪ খ্রিষ্টাব্দ।

    পূর্ব ভারতের সবচেয়ে বড় ৯ ফুটের কষ্টিপাথরের শিবলিঙ্গ এখানে নিত্যপূজিত হয়। শিবলিঙ্গের উচ্চতার জন্য শিবলিঙ্গের মাথায় জল, দুধ ইত্যাদি ঢালবার জন্য সিঁড়ি আছে। সিঁড়ি দিয়ে উঠে বাবার মাথায় জল ঢেলে অপর দিক দিয়ে নেমে যেতে পারেন এবং শিবলিঙ্গের পূর্ণ প্রদক্ষিণ করতে পারেন। বর্তমানে অবশ্য শিবলিঙ্গের পূর্ণ প্রদক্ষিণ বন্ধ আছে। পাশেই রয়েছে 'রাজ্ঞীশ্বর' শিবমন্দির। এই মন্দিরটি উঁচু ভিত্তিবেদির উপর স্থাপিত। বর্গাকার প্রস্থচ্ছেদের চারচালাযুক্ত এই মন্দির। প্রতিষ্ঠাকাল ১৭৬২ খ্রিষ্টাব্দ। মন্দিরে একটি প্রতিষ্ঠাফলক আছে। প্রতিষ্ঠাফলকে উৎকীর্ণ লিপি থেকে জানা যায় যে মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের দ্বিতীয়া মহিষী স্বয়ং যেন মূর্তিমতী লক্ষ্মী ছিলেন। সম্ভবত এই মন্দিরটি মহারাজা তাঁর দ্বিতীয়া মহিষীর জন্য নির্মাণ করেছিলেন এবং প্রথমটি প্রথম মহিষীর জন্য। এই মন্দিরের শিবলিঙ্গ প্রথম মন্দিরের চেয়ে কিছুটা ছোট ( উচ্চতা সাড়ে সাত ফুট ) এবং পূর্বোক্ত মন্দিরের মত এখানেও শিবলিঙ্গের মাথায় জল ঢালবার জন্য সিঁড়ি আছে। এর পাশেই রয়েছে আরকটি রামসীতার মন্দির এটিও বেশ জনপ্রিয়।

    Editor | 14:18 PM, Mon Aug 07, 2023