Friday, November 15, 2024

Logo
Loading...
upload upload upload

dakshineswar kali temple

Hooghly Kali Temple: গঙ্গার ওপারেও রয়েছে আরও এক ‘দক্ষিণেশ্বর’! জানুন প্রায় সাড়ে তিনশো বছর পুরনো এই মন্দিরের ইতিহাস


নিউজ ডেস্ক: ঠিক যেন দক্ষিণেশ্বর। হুবহু একই আদলে গঙ্গার অপর প্রান্তে রয়েছে আরও একটি মন্দির। দক্ষিণেশ্বরে যেমন কালী ভবতারিণী রূপে বিরাজ করেন, তেমনই উল্টোদিকে গঙ্গার জগৎনগরে বিরাজ করেন মা আনন্দময়ী। অনেকেই কালীপুজোর সময় দক্ষিণেশ্বরে পুজো দিতে চান। তবে মারত্মক ভিড় ও লাইন ঠেলে পুজো দেওয়া আর হয়ে ওঠে না। সেই সকল পুণ্যার্থীরা চাইলে কালীপুজোর আগে একবার ঘুরেই আসতে পারেন এই আনন্দময়ীর মন্দির থেকে।

প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে এই মাকে স্বপ্ন দেখেছিলেন এক তান্ত্রিক। তারপরই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এই মন্দির। পরবর্তীতে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভক্তদের দানের টাকায় তৈরি হয়েছে ক্রংক্রিটের দক্ষিণেশ্বরের আদলে এই মন্দির। গ্রামের প্রবীণ জয়দেব রায় বলেন,”আগে এই গ্রাম ছিল জঙ্গলে ভরা নির্জন এলাকা। পাশেই ছিল কানা নদী। এই জঙ্গলে মৃতদেহ সৎকার করতে সকলে শবদেহ নিয়ে আসত শ্মশানে। জানা যায় এই গ্রামের বাসিন্দা সুবল চন্দ্র রায়ের আনন্দময়ী ওরফে ‘আন্দি’ নামে নয় বছর বয়সী এক ব্রাহ্মণ কন্যার মৃত্যু হয়। শ্মশানে মৃতদেহ সৎকার করার সময় হঠাৎ তুমুল ঝড় বৃষ্টি শুরু হতেই শবদাহকারীরা ওই কন্যা সন্তানের জলন্ত মৃতদেহ ফেলে পালিয়ে যায়। সেই সময় পাশেই জঙ্গলে এক সাধক ধ্যানরত অবস্থায় ছিল। তাঁকে দেবী স্বপ্নাদেশ দেন ওই আধপোড়া মৃতদেহ কবর দিয়ে তার উপর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করতে।

সেই থেকে এই মন্দিরে কবরের উপর পঞ্চমুন্ডীর আসনে অধিষ্ঠাত্রী রয়েছেন মা আনন্দময়ী। পূর্বে ওই সাধক এই শ্মশানে ডালপালা ও গাছের পাতা দিয়ে ঘর বানিয়ে মায়ের ঘট স্হাপন করে পুজো শুরু করেছিলেন। এরপর বাংলার ১২৯৪ সালে গ্রামের ব্যাবসায়ী কৈলাস দত্ত মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে একটা ছোট মন্দির প্রতিষ্ঠা করে বেনারস থেকে অষ্টধাতুর মূর্তি এনে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য চন্দননগরের জমিদার ‘সরকার’রা জমি দান করেছিলেন। মায়ের নিত্যপুজো করার জন্য স্বপ্নাদেশ দিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের কাশী থেকে পুরোহিত আনার জন্য। সেই মতো কাশী থেকে দ্বীগম্বর চক্রবর্তী নামে এক পুরোহিতকে আনিয়ে শুরু হয় মায়ের পুজার্চনা। পরবর্তীকালে দীগম্বর চক্রবর্তীর মৃত্যুর পর তাঁর বংশধররা এই মন্দিরে মায়ের পুজোর দ্বায়িত্ব সামলে আসছেন আদি অনন্তকাল ধরে। বাংলার ১৪১২ (ইং 2006) সালে ভক্তদের দানে ৬৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে ৬৫ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট এই মন্দির তৈরি করা হয়।

হাওড়া-বর্ধমান কর্ড লাইন শাখায় মীর্জাপুর-বাঁকীপুর স্টেশনে নামতে হবে। সেখান থেকে দশ মিনিটে পায়ে হাঁটা পথ ধরে আসলেই জগৎনগর গ্রাম। রয়েছে মা আনন্দময়ীর এই কালী মন্দির। সারা বছর ধরে চলে মায়ের পুজো। কালীপুজোর দিন চার প্রহরে বিশেষ পুজো হয়। জেলা সহ বাইরে থেকে প্রচুর ভক্ত উপস্থিত হয় এই কালীপুজোর দিনে।

Sweta Chakrabory | 14:24 PM, Thu Oct 31, 2024
upload
upload