Friday, September 20, 2024

Logo
Loading...
upload upload upload

water hyacinths

Recycled sari: কাশবালিশ হয়নি তবে শান্তিপুরে তৈরি হচ্ছে কচুরিপানার শাড়ি

নিউজ ডেস্ক: কাশফুলের বালিশ হয়নি কিন্তু কচুরিপানা থেকে শাড়ি তৈরি হচ্ছে। কথা আছে শাড়িতেই নারী। নারীর জন্য তৈরি হচ্ছে কচুড়িপানার শাড়ি । এমনিতেই নদীয়ার শান্তিপুরের তাঁতের শাড়ি জগৎ বিখ্যাত। এবার সেই তাঁতের শাড়ির পাশাপাশি স্থান পেতে চলেছে কচুরিপানার শাড়ি । যা এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে শান্তিপুরের তাঁতি ।

পরিত্যক্ত কিংবা অব্যবহৃত বিষয় কাজে লাগিয়ে পুনরায় ব্যবহারের যোগ্য করে তোলান নানান প্রয়াস শুরুর হচ্ছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনো কাশফুলের বালিশ কখনো কচুরিপানা থেকে খাবার তৈরির সম্ভাবনার কথা বলেছিলেন। তার ভাবনা কাজে লাগেনি ঠিকই তবে কচুরিপানারসুত থেকে শাড়ি তৈরি হচ্ছে 

জানেন কি কিভাবে কচুরিপানার শাড়ি তৈরির পথ প্রশস্ত হল? আজ থেকে পাঁচ বছর আগে বনগাঁর বাসিন্দা কৌশিক মন্ডল নদীয়ার শান্তিপুর এলাকার বেশ কিছু তাঁতি সহ সারা বাংলার বিভিন্ন জেলার পরিবেশ রক্ষা এবং নতুন ধরনের চিন্তা ভাবনা সম্পন্ন মানুষজনকে নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন স্বচ্ছতা পুকারে নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।  যদিও সে সময় নদী পরিষ্কার তাদের প্রধান কাজ ছিল। আর সেই কাজ করতে গিয়ে তারা প্রথম লক্ষ্য করেন কোন কাজে না লাগা কচুরিপানা মাছ চাষ এবং নদীপথ যোগাযোগে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করত। সেগুলি পরিষ্কার করার জন্য কৃষকদের অযাচিত ব্যয় হত,  অন্যদিকে সেগুলো পুকুরের কিংবা জলাশয়ের পাড়ে ফেলে নষ্ট হত না

টাটা কোম্পানির এনভারমেন্টাল ডিপার্টমেন্টের চিফ জেনারেল ম্যানেজার গৌরব কুমার আনন্দ এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে পরামর্শদাতা হিসেবে যোগাযোগ হওয়ার পর তিনিই কচুরিপানা দিয়ে কিছু করার চিন্তাভাবনা শুরু করেন। 

প্রাথমিকভাবে  এবং পরীক্ষামূলকভাবে কাজ শুরু হয় শান্তিপুরের বিভিন্ন ডোবা পুকুর পরিষ্কারের পর গোড়া এবং পাতা ফেলে দিয়ে, প্রধান কাণ্ড কিংবা পাতার মোটা ডাটা  থেকে আঁশ ছাড়ানোর, এবং পরবর্তীতে শুকানোর কাজ। তবে এক্ষেত্রে মাত্র দু কেজি তন্তু পাওয়া যায়। তবে এগুলোই সরাসরি সুতো হিসেবে নয়পশ্চিমবঙ্গে স্পিনিং মিলের সংখ্যা কম থাকার কারণে তারা বিভিন্ন রাজ্যের এ ধরনের মিলে সুতো তৈরি করে নিয়ে আসেন। যেগুলো কখনো তানায় কখনো পোড়েন হিসেবে  ব্যবহার করা হচ্ছে তবে ২৫ শতাংশের বেশি কখনোই নয়  কারণ হিসাবে কৌশিক মন্ডল জানান টেকসই এবং ক্রেতাদের ক্ষমতার উপর নজর রেখে এভাবেই প্রায় ৪০০ শাড়ি ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে। যা সাড়া ফেলে দিয়েছে ইউরোপ আমেরিকা মতন দেশ গুলিতে।  তাদের সংগঠনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে  এই উৎপাদনের জন্য। আগামী দিনে অত্যন্ত কমমূলধনের  এই ব্যবসায়  অনেকেই আগ্রহী হবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। পরিবেশের দিক থেকে এবং পরিত্যক্ত রিসাইকেল এই বিষয়টিতে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য উভয় সরকারকে  সহযোগিতার হাত বাড়ানোর জন্য আবেদন জানিয়েছেন সংগঠনের কর্মকর্তারা

আজ নদীয়ার শান্তিপুর মহাপ্রভু পাড়ায় স্বচ্ছতা প্রকারের সংগঠনের এই কাজ দেখতে এসেছিলেন ছত্রিশগড় রাজ্যের জব্বলপুর এলাকা থেকে এনইউএলএমর  স্বেতা সোনি। তিনি বলেন তারা বিভিন্ন ধরনের হস্তচালিত কুটির শিল্প কিংবা ব্যবসায়িক স্বনির্ভরতার সহযোগিতা করে থাকেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় কচুরিপানার এই শাড়ি দেখার পর নিজে এসে স্বচক্ষে দেখে গেলেন শাড়ি উৎপাদন।  আগামী দিনে রাজ্যে ফিরে গিয়ে সেখানে এ ধরনের একটি প্রকল্প করার চিন্তাভাবনা আছে।

সুদূর মুম্বাই থেকে অর্পনা গাইকোড এর নেতৃত্বে ৮ ছাত্রছাত্রীর একদল  ফ্যাশন ডিজাইন এবং বস্ত্র বয়ন সংক্রান্ত পড়াশোনা করা গবেষক ছাত্রছাত্রীরা একইভাবে স্বচক্ষে দেখতে এসেছিলেন শান্তিপুরে। তারাও জানাচ্ছেন অত্যন্ত যুগোপযোগী এই প্রকল্প আগামী দিনে প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থান হতে পারে। তবে শুধু শাড়ি নয় এই ফাইবার বা তন্তু নানান কাজে লাগানো সম্ভব অন্যদিকে এই কচুরিপানা সংগ্রহের ফলে বর্ষাকালে  উপকৃত হবেন বহু মৎস্যজীবী থেকে শুরু করে নদী এবং বিভিন্ন জল পথে যাতায়াত মাধ্যমের কর্মীরাও।

Editor | 17:06 PM, Fri Feb 23, 2024
upload
upload